সম্পাদকীয়
.
তথ্যের বিপনন অধ্যায়গুলো কখনো সখনো আলাদা পঙতিতে লেখা ইতিহাসের পাতায় । রাজাদের কথা, প্রজাদের কথা । আমার কথা অথবা তোমার কথা । বিক্ষিপ্ত থাকে অতীত - ইতিহাস । বর্তমানের হাত ধরা হয়না ঠিক করে । ফসকে যায় । আলগা হয় মুঠো । নিরুত্তর থাকে শব্দের আস্ফালন । হত্যার পদ্ধতি পরিবর্তন হয় । লাশের গুনতিতে ভুল হয় না কখনো । হত্যাকারীরা বার বার ফিরে আসে । ফিরে আসে আবার ফিরে আসে । কখনো শানিত অস্ত্রের উন্মাদ আস্ফালন নিয়ে, কখনো ধর্মীয় সন্ত্রাসের হাত ধরে । সবই চুক্তিগত ইতিহাসের অক্ষর । দৈন্যক্লিষ্ট বেদনামথিত অন্ত:সারশূন্য জীবন থেকেই উপলব্ধি করা যায়, হারানো শূন্যতাও নিবিষ্ট চোখে খোঁজে ইতিহাসের অক্ষর , যার সাথে দেখা যায় ভাববাদ আর বস্তুবাদের ব্যবধান তাঁর সৃষ্টিকে গভীর দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে আস্থাহীন করে তোলে, খোঁজ সেখানেই অসমাপ্ত থাকে । আর এই অসমাপ্ত খোঁজই একজন কবির দিগন্তের সাথে মিলে মিশে যায়, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনীতির অসামাঞ্জস্যতা ।
“বদলে যায় বদলে যায়— বদলে যেতে-যেতে / একটি ইঁদুর থমকে দাঁড়ায় খড়বিচুলির ক্ষেতে”
প্রতিটি কেন্দ্রীয় চরিত্রের মধ্যে যে ক্ষয়িষ্ণুতা, একে অপরের চিন্তন প্রক্রিয়াকে ক্রমাগত অন্তর্জগতের মধ্যে অনমনীয় দ্বন্দ্বের জন্ম দেয়, তার চেতনা ও বোধ সাথে সম্মিলিত ভাবে সামাজিক অবস্থানের রেখাপাত করতে গিয়েও কখন যেন স্খলিত হয় আঁচল । তখন মানসতলবর্তী লোভ -ঘৃণা- আকাঙ্খা সব কিছু এক সাথে জাপ্টে ধরে আমাদের প্রতিটি জাগতিক স্বপ্নের সাথে, আর হেরে যাওয়া আর কোন কিছুরই গুরুত্ব থাকে না ।
“সকল উৎপীড়কের বিরুদ্ধে সকল উৎপীড়িতের সঙ্গে”
নির্দিষ্ট কিছু মিথ্যের সাথে সৃষ্টির যন্ত্রণা যখন বেরিয়ে আসে, তখন সেই মিথ্যের মধ্যেই সামাজিক আবর্জনাগুলো মুখ তুলে বেরিয়ে আসে । যেখানে প্রেমও মিথ্যের নির্মমতা নিয়ে আঁতুড়েই ভাগাড় তৈরী করে । আঁতুড়েই জন্ম হয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস । আঁতুড়েই হত্যা হয় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শিশুর হাসি-কান্না । আর সেই ছবি বার বার ভেসে ওঠে গোয়েবলসের আয়নায় । শুধু নামের পরিবর্তন, পদ্ধতিগুলো শুধু আঙ্গিক পায় আধুনিক ধারণার হোয়াটসঅ্যাপ মাফিয়াদের আড্ডায় ।
“চোখ বুজে বলে দেয়া যায় যে ফ্যাসিস্ট মনোবৃত্তি ... বাঁধন-ছেঁড়া ক্ষিপ্ত কুকুরের মত ছুটে বেরিয়ে এসে তাদেরই কামড়াতে যাবে মুক্তির সাধনায় জীবন যাদের উৎসর্গিত ।”
প্রতিদিন ইতিহাস বিকৃত হয় । প্রতিদিন স্বপ্নের সাথে ঘ্যান ঘ্যান করে মিথ্যে প্রোপোগান্ডা । প্রতিদিন ইতিহাস বিপন্ন হয় ধর্ষিতার রক্তে । সফেদ চোর ডাকাতের দল চিহ্নিত হয় দেশভক্তের কলমে । ধর্মীয় মাফিয়া অধিকার করে সভ্যতার নষ্ট বীজ । তবু চোখের দৃস্টি ক্রমশঃ ফ্যাকাশে হয় ।
“শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে,
আমার পক্ষে কেউ কোন কথা বলল না, কারণ, কথা বলার মত তখন আর কেউ বেঁচে ছিল না। “
0 মন্তব্য
প্রদর্শন
আড়াল